গোসলের ফরজ, সুন্নত, মুস্তাহাব এবং আদবসমূহ
- গোসলখানার মধ্যে যদি পায়খানা থাকে নোংরা কোন জিনিস থাকে তাহলে গোসল খানার মধ্যে প্রথমে বাম পা দিয়ে প্রবেশ করতে হবে।আর যদি নোংরা কোন জিনিস না থাকে পায়খানা ও না থাকে,যদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে,তাহলে যে কোন পা দিয়ে প্রবেশ করলে কোন সমস্যা নেই।
- গোসলের নিয়ত করা সুন্নাত।
- নিয়ত এভাবে করা যায় -আমি জানাবাত থেকে পবিত্রতা হাছেল করার জন্য গোসলের নিয়ত করছি।
পেজ সূচিপত্র
- কুলি করা ফরজ।
- ফরজ গোসল করতে হয় যেসব কারণে
- তাইয়াম্মুমের মাসায়েল বিষয়ে আলোচনা
- কি কি বস্তু দ্বারা তাইয়াম্মুম করা জায়েজ
- কোন অপবিত্রতায় তাইয়াম্মুম করা যায়
- কখন তাইয়াম্মুম করতে হবে
- কোন কোন কারনে তাইয়াম্মুম ভঙ্গ হয়
- বসে গোসল করা উত্তম। আড়াল স্থানে এবং ছাতর ঢেকে গোসল করা মুস্তাহাব। যদি আড়াল স্থান হয় তবে উলঙ্গ হয়ে গোসল করা জায়েয তবে মুস্তাহাবের খেলাফ হবে। গোসলের শুরুতেই দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত ধৌত করতে হবে। এটা সুন্নত। গোসল করার সময় কেবলামুখী হয়ে না গোসল করাই উত্তম।
- প্রসাব পায়খানার রাস্তা পাক-পবিত্র থাকলে ও তা ধৌত সুন্নাত। শরীরের কোন স্থানে যদি,নাপাকি থাকে তাহলে তা ধৌত করা সুন্নত।
- গোসলের ফরজ সমূহ নিয়ে আলোচনা করা হলো:-
কুলি করা ফরজ
- রোজাদার না হলে গড়গড়া করা সুন্নাত, এরূপ তিনবার গড়গড়া কুলি করাও সুন্নাত।
- নাকের নরম স্থান পর্যন্ত অবশ্যই ভালো হবে পানি পৌঁছাতে হবে,কারণ নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌঁছানো ফরজ।নাকের মধ্যে শুকনো ময়লা থাকলে তা ভালো হবে পরিষ্কার করতে হবে। তিনবার এরূপ পানি পৌঁছানো সুন্নত।
- সমস্ত শরীর ভালোভাবে ধৌত করা ফরজ।মহিলাদের নাকে কানে অলংকার থাকলে নাড়াচাড়া দিয়ে ছিদ্রের ভেতরে পানি প্রবেশ করাতে হবে। মহিলাদের চুলের মধ্যে বেনি খোঁপা যদি থাকে,এবং সেটি থাকার কারণে যদি,পানি পৌঁছানো অসম্ভব হয় তাহলে সেটি খুলতে হবে।আর যদি বেনি খোঁপা থাকা সত্ত্বেও পানি সেখানে পৌঁছায় তাহলে বেনি খোঁপা খোলা জরুরী নয়।
- গোসলের স্থানে পানি জমা হয় এমন স্থানে গোসল করলে পরে অন্যত্রে সরে গিয়ে পা ধৌত করা সুন্নত। সমস্ত শরীরে পানি পৌঁছানোর কিছু সুন্নতি তরীকা আছে তা হল-প্রথমে ভিজা হাত দিয়ে সমস্ত শরীর ভিজিয়ে নিবে। তারপর তিনবার মাথায় পানি ঢালবে। তিনবার ডান কাঁদে পানি ঢালবে।আর তিনবার বাম কাঁধে পানি ঢালবে। প্রতিবার পানি ঢেলে ভালোভাবে শরীর ধৌত করিতে হবে।
- গোসল শেষ হওয়ার পর ভালো পরিষ্কার বা গামছা দিয়ে শরীর ভালোভাবে পানি মুছে ফেলতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব কাপড় দ্বারা শরীর আবৃত করতে হবে।
- গোসলখানা থেকে বের হওয়ার সময় যদি বাম পা দিয়ে প্রবেশ করেন।তাহলে বের হওয়ার সময় ডান পা আগে দিয়ে গোসলখানা থেকে বের হতে হবে।
- বের হওয়ার সময় যেসব দোয়া পড়া হয় তা মুস্তাহাব এখানে সেই দোয়া গুলো অবশ্যই পড়বেন
- গোসল করার পর,যদি দেখেন কোন অংশ শুকনো রয়ে গেছে,সেই জায়গাটুকু শুধু পানি দিয়ে ধুয়ে নিলেই হবে পুনরায় গোসল করার কোনো প্রয়োজন নেই.
- [ফরজ গোসল করতে হয় যেসব কারণে]
- যৌন সঙ্গম দ্বারা অথবা অন্য কোনো কারণে জোশর এর সঙ্গে মনী (বীর্য) বের হলে।
ঘুমন্ত অবস্থায় স্বপ্ন দেখুক বা না দেখুক দিনে অথবা রাতে
বীর্যপাত হলে। ৩.স্বামীর লিঙ্গের শুধু অগ্রভাগ অর্থাৎ,খৎনার স্থানটুকু স্ত্রীর
গোপন অঙ্গে প্রবেশ করলে যদি কোন কিছু বের না হয়। তবুও তার গোসল করা ফরজ হয়ে
যায়।মেয়েদের হায়েজ হওয়ার পর যখন রক্ত বন্ধ হয়,তখন গোসল করা ফরজ হয়। মেয়েদের নেফাসের রক্তস্রাব বন্ধ হলে পাক হওয়ার জন্য গোসল করা ফরজ হয়ে যায়
গোসল ফরজ হয় না যে সব কারণ
- কোন রোগের কারণে যদি ধাতু পাতলা হয়,আর কোন আঘাত খেয়ে বা কোন উত্তেজনা ছারাই ধাতু নির্গত হয় তাতে গোসল করা ফরজ হয় না।
- স্বামী-স্ত্রী শুধু লিঙ্গ স্পর্শ করে যদি ছেড়ে দেয়- কোন কিছু ভিতরে প্রবেশ করে না ও বের হয় না,তাতে গোসল করা ফরজ হয় না।
- শুধু মুজি বের হলে ওযু ভেঙে যায় গোসল ফরজ হয় না।
ঘুম থেকে ওঠার পরে শরীরে বা অন্য কোথাও পোশাক-আশাকে কোন
কিছু দেখা না যায়,তাতে গোসল ফরজ হয় না।
- তাইয়াম্মুমের মাসায়েল বিষয়ে আলোচনা
- পানি না পাওয়ার কারণে যাকে তাইয়াম্মুম করতে হবে পানি পাওয়ার পাওয়ার প্রবল ধারণা থাকলে মুস্তাহাব ওয়াক্ত পার হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত অপেক্ষা করা তার জন্য মুস্তাহাব।যদি কেউ পানি দেওয়ার জন্য ওয়াদা করে তবে তাকে অপেক্ষা করতে হবে না যদিও ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আশঙ্কা হয়।
- তায়াম্মুমের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা সুন্নত।
- মেসওয়াক করা উয়ুর নাই তায়াম্মুমের ও সুন্নাত।
- নিয়ত করা ফরজ.পবিত্রতা অর্জন করার জন্য নাপাকি দূর করার জন্য নিয়ত করা ফরজ। নামাজ সজদায়ে তেলাওয়াত প্রভৃতি এমন মৌলিক ইবাদতের নিয়ত করবে যা পবিত্রতা ব্যতীত সহীহ হয় না। নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা উত্তম এই অর্থে যে তাতে মনের খটকা দূর হয়ে যায়। মূলত নিয়তকে মনের ইরাদা বা ইচ্ছাকে বলা হয়। তাই নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা জরুরী বিষয় নয়। নিয়ত যেভাবে করা যায় -আমি নাপাকে দূর করার,নামাজ বৈধ করার এবং আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য অর্জন করার উদ্দেশ্যে তায়াম্মুমের নিয়ত করছি।
- নিয়ত করার পর পবিত্র মাটি বা মাটি জাতীয় বস্তু (যার ওপর তাইয়াম্মুম করা যায়) এর ওপরে হাতের তালু মারবে।হাত মারার সময় হাতের সব আঙ্গুলগুলো খোলা রাখা সুন্নত। হাত মারার পর উভয় হাত ওই স্থানে রাখা অবস্থায় একবার সামনের দিকে একবার পিছনে দিকে নিবে। এটা সুন্নত। ভাত এমনভাবে যাবে যাতে আলগা ধুলা ঝরে যায
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url